Sunday, December 17, 2017

দিনে ২ হাজার শালিককে খাওয়ান তিনি

২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো এক সকালে নিজের দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন সমর কুমার ঘোষ। দেখলেন কয়েকটি শালিক খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছে। এ সময় তাদেরকে তিনি চানাচুর খেতে দেন। পরদিন দেখেন একই সময় আরো অনেকগুলো শালিক এসে জড়ো হয়েছে খাবার খেতে। গত পাঁচ বছর যাবৎ রোজ সকালে দুই হাজার শালিক পাখিকে খাবার খাওয়াচ্ছেন পাবনার সমর কুমার ঘোষ। প্রতিদিন সকাল হলেই পাখিগুলো এসে ভিড় করতে শুরু করে সমরের মিষ্টির দোকানের সামনে।

সমর রোজ অনেক ভালোবাসা নিয়ে পাখিগুলোকে খাবার খাওয়ান। আর তা দেখতে তার 'শ্যামল মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের' সামনে এখন ভিড় করেন আশপাশ থেকে আসা অনেক মানুষ।
সমর বলেন, পাঁচ বছর আগে কয়েকটি শালিককে খাবার দেই। পরদিন খেয়াল করি একই সময় আরো অনেকগুলো পাখি এসে জড়ো হয়েছে। দিন দিন এ পাখির সংখ্যা বেড়ে দুই হাজারে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, পাখিগুলো প্রায় ১০-১৫ কিলোমিটার দূর থেকে উড়ে এসে আমার এখানে নাস্তা করে। তাদের খাবারের পেছনে আমার মাসে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু এতগুলো পাখি যখন আমার চারপাশে ঘুরে বেড়ায় তখন একটা স্বর্গীয় অনুভূতি নিয়ে আমার দিন শুরু হয়।
পাখি দেখতে আসা আরমান হোসেন নামে একজন বলেন, আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে সাধারণত শালিক পাখি অনেক শব্দ করলেও সমরের দোকানের সামনে তারা কোনো শব্দই করে না। বরং শান্তভাবে খেয়ে আবার উড়ে যায়।
সমরের মত একজন মধ্যবিত্তের জন্য মাসে ৪৫ হাজার টাকা পাখির পেছনে খরচ করা বেশ কঠিন হলেও তিনি এটাকে ব্যাখ্যা করেন অন্য ভাবে। তার ভাষ্য, ‘আসলে আমি কিছুই করছি না। সবই সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। তিনি চাইলে আমি আরো বেশি করে তার সৃষ্টির সেবা করার সক্ষমতা লাভ করব।’
সমরের এই অবদানের জন্য গত বছর বন বিভাগ তাকে দেশ সেরা 'পাখি প্রেমিক' উপাধি দিয়ে পুরস্কৃত করে।
সমর যখন শহরের বাইরে যান তখন তার ১১ বছর বয়সী ছেলে স্মরণ কুমার ঘোষ পাখিগুলোকে খাবার দেয়। ছেলেকে ভবিষ্যতেও এটা চালিয়ে যাওয়ার জন্যই বলেছেন সমর।
Read More

Saturday, December 2, 2017

পাবনাকে ধ্বংস করতে রূপপুর প্রকল্পই যথেষ্ট!


পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে এক হাজার ৬শ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) এ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রিয়াক্টর ভবনের প্রথম কংক্রিট ঢালাইয়ের মাধ্যমে মূল কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনটি চুক্তির আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করবে রাশিয়ান ফেডারেশনের এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট।
১৯৬১ সালে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প গ্রহণ করেছিলো তৎকালীন আইয়ুব খানের সরকার। স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭৩ ও ১০৮০ সালে ফের উদ্যোগ নিয়ে আর্থিক সংকটে ব্যর্থ হয়। পরবর্তী ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাশিয়ার সঙ্গে এই প্রকল্প নিয়ে যোগাযোগ করে।
স্মারকলিপি, মানববন্ধন, পোস্টার-লিফলেট বিলি, মাইকিংসহ সব সমালোচনাকে ঊর্ধ্বে রেখে সরকার বলছে- এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পারমাণবিক যুগে প্রবেশ করলো। পাশাপাশি মিটবে বিদ্যুৎ চাহিদাও। পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের যুগে প্রবেশের মধ্যে দিয়ে রূপপুরের আলোয় আলোকিত হবে দেশ। তবে বিশ্লেষকরা বলছে শুধু আলো নয় এর মাধ্যমে অন্ধকার নেমে অাসারও আশঙ্কা আছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ জাতির জন্য সম্মানের বিষয়। বাংলাদেশ ভূমিকম্প ঝুঁকিতে থাকলেও রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র রিখটার স্কেলে ১০ মাত্রার ভূমিকম্প সহ্য করার মতো করে তৈরি করা হচ্ছে। পরিবেশ ও মানুষের যাতে ক্ষতি না হয় তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
যেকোন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ তার ব্যবহৃত জ্বালানি বা বর্জ্য অপসারণ ব্যবস্থাপনা। এই প্রকল্পের পারমাণবিক বর্জ্য, আর্থিক ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নিয়ে বিতর্ক আছে। বিতর্ক আছে অন্যান্য পন্থায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি ব্যয় করে এই পরমাণু বিদ্যুৎ স্থাপনার লাভ-ক্ষতি, মাত্রাতিরিক্ত পরিচালন ব্যয়, পরমাণু বর্জ্য অপসারণ, স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও চরম হুমকিস্বরূপ। অতীত ইতিহাস ও বর্তমান দেখলে আমরা যে ভয়াবহ চিত্র পাই তাতে শুধু রূপপুর বা ঈশ্বরদী নয়, পাবনা জেলাকে ধ্বংসের জন্য এ ধরনের একটি প্রকল্পই যথেষ্ট।
জার্মানি, ইংল্যান্ডসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশ পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিচ্ছে, বন্ধ করে দিয়েছে নতুন কেন্দ্র স্থাপন। রাশিয়ার চেরনোবিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার থ্রি-মাইল আইল্যান্ড ও সাম্প্রতিক জাপানের ফুকুশিমাসহ বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুর্ঘটনা সাধারণ জনগণ ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে চরম ভয় ও উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। যার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চালু পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ও নির্মাণ কাজ চলছে এমন কেন্দ্রও বন্ধ করার জন্য সেসব দেশের সাধারণ জনগণ আন্দোলন করছেন। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও আন্দোলন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
১৯৫০–এর দশক থেকে ২০১০ পর্যন্ত হিসেবে দেখা গেছে যে, বেসামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত কমপক্ষে ২৮টি পারমাণবিক কেন্দ্রে দুর্ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়ার (বর্তমান ইউক্রেনে) চেরনোবিলে পরমাণু স্থাপনায় দুর্ঘটনায় তাৎক্ষণিক ৩০ জন নিহত হয়। তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়লে অন্তত ৪ হাজার মানুষ মারা যায়। ঐ দুর্ঘটনার চারপাশের ১৮ দশমিক ৫ মাইল এলাকা বিচ্ছিন্ন অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। ২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় কয়েক শতাধিক মানুষ নিহত হয়। বিস্ফোরণে জাপান এখন তেজস্ক্রিয় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে- যদি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটে তাহলে দরিদ্র দেশ হিসেবে কতটুকু মোকাবেল করতে পারবে সেই বিপর্যয়ের।
Read More

About us

Lorem Ipsum is simply dummy text of the printing and typesetting industry. Lorem Ipsum has been the industry's standard dummy text ever since the 1500s, when an unknown printer took a galley of type and scrambled it to make a type specimen book

Services

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

More Services

© 2014 Pabna Guide. Template Designed by Bloggertheme9