২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো এক সকালে নিজের দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন সমর কুমার ঘোষ। দেখলেন কয়েকটি শালিক খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছে। এ সময় তাদেরকে তিনি চানাচুর খেতে দেন। পরদিন দেখেন একই সময় আরো অনেকগুলো শালিক এসে জড়ো হয়েছে খাবার খেতে। গত পাঁচ বছর যাবৎ রোজ সকালে দুই হাজার শালিক পাখিকে খাবার খাওয়াচ্ছেন পাবনার সমর কুমার ঘোষ। প্রতিদিন সকাল হলেই পাখিগুলো এসে ভিড় করতে শুরু করে সমরের মিষ্টির দোকানের সামনে।
সমর রোজ অনেক ভালোবাসা নিয়ে পাখিগুলোকে খাবার খাওয়ান। আর তা দেখতে তার 'শ্যামল মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের' সামনে এখন ভিড় করেন আশপাশ থেকে আসা অনেক মানুষ।
সমর বলেন, পাঁচ বছর আগে কয়েকটি শালিককে খাবার দেই। পরদিন খেয়াল করি একই সময় আরো অনেকগুলো পাখি এসে জড়ো হয়েছে। দিন দিন এ পাখির সংখ্যা বেড়ে দুই হাজারে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, পাখিগুলো প্রায় ১০-১৫ কিলোমিটার দূর থেকে উড়ে এসে আমার এখানে নাস্তা করে। তাদের খাবারের পেছনে আমার মাসে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু এতগুলো পাখি যখন আমার চারপাশে ঘুরে বেড়ায় তখন একটা স্বর্গীয় অনুভূতি নিয়ে আমার দিন শুরু হয়।
পাখি দেখতে আসা আরমান হোসেন নামে একজন বলেন, আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে সাধারণত শালিক পাখি অনেক শব্দ করলেও সমরের দোকানের সামনে তারা কোনো শব্দই করে না। বরং শান্তভাবে খেয়ে আবার উড়ে যায়।
পাখি দেখতে আসা আরমান হোসেন নামে একজন বলেন, আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে সাধারণত শালিক পাখি অনেক শব্দ করলেও সমরের দোকানের সামনে তারা কোনো শব্দই করে না। বরং শান্তভাবে খেয়ে আবার উড়ে যায়।
সমরের মত একজন মধ্যবিত্তের জন্য মাসে ৪৫ হাজার টাকা পাখির পেছনে খরচ করা বেশ কঠিন হলেও তিনি এটাকে ব্যাখ্যা করেন অন্য ভাবে। তার ভাষ্য, ‘আসলে আমি কিছুই করছি না। সবই সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। তিনি চাইলে আমি আরো বেশি করে তার সৃষ্টির সেবা করার সক্ষমতা লাভ করব।’
সমরের এই অবদানের জন্য গত বছর বন বিভাগ তাকে দেশ সেরা 'পাখি প্রেমিক' উপাধি দিয়ে পুরস্কৃত করে।
সমর যখন শহরের বাইরে যান তখন তার ১১ বছর বয়সী ছেলে স্মরণ কুমার ঘোষ পাখিগুলোকে খাবার দেয়। ছেলেকে ভবিষ্যতেও এটা চালিয়ে যাওয়ার জন্যই বলেছেন সমর।