দু’কুলের প্রকৃতি ছুয়ে বয়ে যাচ্ছে ¯্রােতধারা। দুই পাশে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য কবি গুরু রবীন্দ্রনাথের বর্ণনায় উঠে আসা এ যেন সেই চিরচেনা ইছামতি। আহ্ ! সারা বছর যদি এমনটা থাকতো। নদীর পাশে দাঁড়িয়ে স্মৃতি চারণ করে কথাগুলো বলছিলেন শহরের বাসিন্দা জাকির হোসেন। বর্তমান শহরের পেটের ভিতর দিয়ে বয়ে চলা ইছামতি নদী পানিতে টলমল। নেই আবর্জনার স্তুপ। দক্ষিণ থেকে উত্তরদিকে মৃদু ¯্রােতের এ যেন এক অন্য ইছামতি নদী । দেখে মনে হয় শহর জুড়ে থাকা শান্ত একটি নদীর বয়ে চলা। গত কয়েকদিন ধরে বন্যার কারণে নদীতে পানি আসতে শুরু করে। এরপর থেকে নদীতে পানি বারতে থাকে।
কোন কোন জায়গায় রাস্তা প্রায় ছুই ছুই পানি। শুক্রবার শহরের গোবিন্দা এলাকার দেওয়ানবাড়ী জামে মসজিদ থেকে জুম্মার নামাজ শেষে মুসল্লিরা বের হয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে থাকে। এ যেন তাদের সেই হারিয়ে যাওয়া ইছামতি। তারা স্মৃতিচারণ করে পুরোনো কথা তুলে ধরে বলেন, আজ থেকে ৪৫-৪৬ বছর আগেও এ নদীতে ঢেউ উঠতো। এক সময় নদীতে সাড়ি সাড়ি পানসি নৌকা চলতো। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মালামাল বহন করে নেয়া হতো।
নৌকা বাইচ খেলা হতো। এ এলাকার অনেক নব বধূই এই ইছামতি নদী বয়ে প্রথম শশুরবাড়ীতে পদার্পন করেছেন। কেউ কেউ নদী নিয়ে তাদের বর্তমান শতশত পরিকল্পনার কথা আনন্দের সাথে তুলে ধরেন। কেউ বলছেন নদীতে নৌকা কিনে এনে চালাবেন, কেউ বলছেন মাছ ধরবেন, গোসল করবেন। তারা স্মৃতিচারণ করে বলেন এই নদী আমাদের প্রাণের স্পন্দনের সাথে মিশে আছে। নদীতে যেন এভাইে সারা বছর পানি টলমল করে। নদীর পানি দেখছেন উৎসুক শহরবাসী।
প্রায় শহর জুড়ে চলছে আলোচনা। সবার প্রাণের চাওয়া দীর্ঘস্থায়ীভাবে যেন নদীতে আবার ফিরে আসে প্রাণ। পানিতে ভরা টলমলে নদীটি দেখে সবচেয়ে বেশী খুশি হয়েছে শিশুরা। তাদের কৌতুহল ভাবনা এ যেন এক নতুন ইছামতি। তাদের আনন্দের শেষ নেই। এই আনন্দ যেন ক্ষণিকের না হয় সেই স্বপ্ন দেখছেন আজ শহরবাসী।
No comments:
Write comments